কিভাবে ব্লগের জন্য ডোমেইন পছন্দ করবেন

নিংসন্দেহে নিজের একটি ডোমেইন আপনার ওয়েবসাইটকে পেশাদারিত্বের একটি নতুন মাত্রা দেবে। ডোমেইনটি লেখক হিসেবে আপনাকে এবং আপনার ওয়েবসাইটকে পাঠকের কাছে তুলে ধরবে। যেকোন ওয়েবসাইটে সর্বপ্রথম ডোমেইনটিই পাঠকের নজরে আসে এবং এর উপর ব্লগের সাফল্য নির্ভর করে। তাই ব্লগিং কিংবা ওয়েবসাইটে সাফল্য পেতে ডোমেইনটি সঠিক হওয়া খুবই জরুরি।

ছোট্ট একটি উদাহরন দেই। ধরুন আপনি ব্লগ বানিয়েছেন blogger.com কিংবা wordpress.com এর ফ্রি সাবডোমেইন ব্যবহার করে আর ব্লগের বিষয়বস্তু কিভাবে ইন্টারনেটে আয় করা যায়। স্বাভাবিকভাবেই পাঠক হিসেবে আমার নজর ডোমেইনে চলে যাবে্। এখন আপনি যত ভাল ব্লগারই হোন না কেন, আর যতই বলেন আপনি হাজার হাজার টাকা কামাচ্ছেন, আমি বিশ্বাস করব না। কারন আপনি যদি এত টাকাই কামাই করছেন তবে ১০ ডলার দিয়ে একটি ডোমেইন কিনছেন না কেন?

সবসময় ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই ডোমেইন পছন্দ করা উচিৎ। সময় নিয়ে গবেষনা করে ঠিক করা উচিত কোন ডোমেইনটি আপনার ব্লগের মূল বিষয়কে ফুঁটিয়ে তুলতে পারবে। এমন যেন না হয় যে, তাড়াহুড়ো করে কোনো ডোমেইন কিনলেন, এরপর কিছুদিন ব্যবহারের পর মনে হল ডোমেইনটি আপনার ব্লগকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারছে না। ফলে নতুন ডোমেইন কিনে পুরো ওয়েবসাইটটি নতুন ডোমেইনে স্থানান্তর করলেন্। ফলে আপনি কেবল আগের পুরোনো পাঠকই হারাবেন না, বরং আগের ওয়েবসাইটে যে সুার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করেছিলেন, সবগুলো্ই প্রায় জলে যাবে।

ডোমেইনটি কেমন হওয়া উচিত…

  • যেন সহজে মনে রাখা যায়
  • যেন সহজে বানান করা যায় (মনে রাখার সুবির্ধাথে শব্দের মাঝে মাঝে ড্যাস “-” ব্যবহার করতে পারেন)
  • যেন শ্রুতিমধুর হয়, উদ্ভদ কোনো ডোমেইন পছন্দ করে পাঠকে ভড়কে দেবার প্রয়োজন নেই
  • যেন ডোমেনইটি আকারে বড় না হয়
  • যেন অন্য কোনো প্রতিষ্টিত ওয়েবসাইটের নামের সাথে গুলিয়ে না যায়

ডোমেইন কি কি নিয়ে হতে পারে…

  • ওয়েবসাইট/ব্লগটি কোনো প্রতিষ্ঠানকে পৃষ্ঠপোশকতা করলে প্রতিষ্ঠানের নামে সাথে মিল থাকলে ভাল। যেমন আমার চাকুরিদাতা প্রতিষ্ঠানের নাম FE Samuels Group আর আমাদের প্রধান ওয়েবসাইটের ডোমেইন হল www.fesamuels.com। অনেকে প্রতিষ্ঠানের নামের ক্ষেত্রে .org ব্যবহার করতে পছন্দ করেন।
  • কোনো নিদির্ষ্ট বিষয়ে (niche blogging) করলে, ব্লগের ডোমেইনে প্রধান keywords গুলো থাকলে ভাল হয়।
  • ব্যক্তিগত ব্লগ করতে চাইলে নিজের নামেও ডোমেইন কিনতে পারেন। আমার ইংরেজি ব্লগের ডোমেইন www.hasan-online.com এবং বাংলা ব্লগের নাম http://bn.jinnatulhasan.com
  • কোনো ট্রেডর্মাক ব্রান্ড ডোমেইনে না থাকাই ভাল, পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে

ডোমেইনে কেন keywords ব্যবহার করবেন…

  • ডোমেইন keywords থাকলে, এটি দেখেই ওয়েবসাইটের / ব্লগের বিষয়বস্তু সম্বন্ধে ধারনা পাওয়া সম্ভব।
  • ডোমেইনে keywords থাকলে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বেশ সহজ হয়ে যায় এবং সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। বিশেষ করে ইয়াহুতে ডোমেইনের keywords খুব কাজে দেয়।
  • Backlink পাওয়া সহজ হয়ে যায়। যেহেতু ডোমেইনে keywords আছে সেহেতু anchor text এ কেবল ডোমেইন জুড়ে দিলেও লিংকটি ওয়েবসাইট সর্ম্পকিত text থেকে সংযুক্ত হচ্ছে বলে লিংকগুলো অন্য লিংকের চেয়ে শক্তিশালী হয়।

ডোমেইন নিয়ে গবেষনার হাতিয়ার…

আপনি যদি ডোমেইনে কি keywords ব্যবহার করবেন, তা ভেবে না পান তবে গুগলের AdWords Keyword Tool টি ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া NameBoy এবং Domain Suggestions ওয়েবসাইট দু’টি ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পছন্দ করা keywords এর উপর ভিত্তি করে এরা আপনাকে একাধিক ডোমেইন সম্বন্ধে ধারনা দেবে।

কোথায় ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করবেন…

ডোমেইন পছন্দ করাটাই সবচেয়ে কঠিন, নতুবা এটি রেজিস্ট্রেশন করা ছেলের হাতের মোয়ার মতো সহজ। আমি ব্যক্তিগতভাবে GoDaddy এবং ABCOnlineServices থেকে ডোমেইন কিনি। GoDaddy দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এবং হোস্টিং কোম্পানি আর আমি GoDaddy থেকে রিসেলার একাউন্ট হিসেবে ABCOnlineServices কিনেছি। নিজের জন্যে কিছু কিনলে আমি GoDaddy থেকে কিনি, কারন নিজের একাউন্ট ব্যবহার করে আমি আমার রিসেলার একাউন্ট থেকে কিছু কিনতে পারব না। আর আমার ক্লায়েন্টদের জন্য কিছু কিনলে ABCOnlineServices থেকে কিনি – এতে করে GoDaddy এর কাস্টমার সার্ভিসের সাথে সাথে আমিও আমার ক্লায়েন্টদের ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দিতে পারি। এখানে রইল GoDaddy এর বর্তমান মূল্য তালিকা:
Godaddy ডোমেইন মূল্য তালিকা

এছাড়াও BlueHost এবং HostGator থেকেও ডোমেইন এবং হোস্টিং সুবিধা কিনতে পারেন। আর ক্রেডিট কার্ডে সমস্যা হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, আশা করি সাহায্য করতে পারব।

.com কিংবা অন্য ডোমেইনগুলোর মূল্য প্রথমে অনেক বেশি মনে হতে পারে। তাই অনেকে ফ্রি-র দিকে ঝুঁকে পড়ে কিন্তু যদি আপনি ভবিষ্যতের চিন্তা করে ওয়েবসাইট / ব্লগ বানিয়ে থাকেন, তবে ডোমেইন কিনে ফেলাই উচিত। ১০ মার্কিন ডলার বাংলাদেশি ৬৮৭ টাকার সমান, হিসেবমতে ইন্টারনেটে নিজের একটি ঠিকানার জন্য প্রতিদিন আপনাকে ব্যয় করতে হবে মাত্র ১ টাকা ৮৮ পয়সা!

This entry was posted in ওয়েব ডিজাইন and tagged , , . Bookmark the permalink.

Leave a comment